WBJEE OBC Reservation Case: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা ও সংরক্ষণ নীতির নতুন মোড়

WBJEE OBC Reservation Case

এই নিবন্ধটি পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা বোর্ড (WBJEEB) এবং OBC সংরক্ষণ নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে চলমান আইনি লড়াইয়ের একটি বিশদ বিবরণ প্রদান করে। এটি হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ এবং রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে এই মামলার প্রভাব তুলে ধরে। 

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে OBC সংরক্ষণ নীতি নিয়ে চলমান আইনি জটিলতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। West Bengal Joint Entrance Examinations Board (WBJEEB) এবং কলকাতা হাইকোর্টের মধ্যে এই বিতর্ক ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সম্প্রতি WBJEEB সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছে, যা রাজ্যের OBC reservation policy নিয়ে আলোচনাকে আরও জোরদার করেছে। এই মামলা শুধু ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রেই নয়, বরং হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ও শিক্ষা ব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

মামলার পটভূমি

বিতর্কের শুরু হয় যখন WBJEEB ২০১০-এর পূর্বের ৬৬টি OBC ক্যাটাগরির পাশাপাশি নতুন ১৪০টি OBC sub-categories অন্তর্ভুক্ত করে মেধা তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতা হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আদেশ জারি করে, যা WBJEEB-কে বাধ্য করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতে ফলাফল প্রকাশ এবং ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও, হাইকোর্টের পরবর্তী আদেশগুলি আবারও জটিলতা সৃষ্টি করে। এই আইনি টানাপোড়েন ছাত্রদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ

কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক আদেশ এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ৭ আগস্ট, ২০২৫: বিচারপতি কৌশিক চন্দের আদেশে বলা হয়, WBJEEB-এর মেধা তালিকা আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে।

  • ২১ মে, ২০২৫: হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে, ২০১০-এর পূর্বের ৬৬টি OBC শ্রেণীর জন্য ৭% সংরক্ষণ নিশ্চিত করে নতুন merit list প্রকাশ করতে হবে।

  • ২২ মে, ২০২২: আদালতের পূর্ববর্তী রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে WBJEEB-কে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই আদেশগুলি WBJEEB-এর ফলাফল প্রকাশের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করেছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ

সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২২ আগস্ট, ২০২৫-এ, শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের উপর stay order জারি করে, যা WBJEEB-কে বিদ্যমান মেধা তালিকার ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশের অনুমতি দেয়। তবে, OBC-B সার্টিফিকেটের বৈধতা নিয়ে কোনো নতুন রায় দেওয়া হয়নি। এছাড়া, বিচারপতি বি.আর. গাভাইয়ের নেতৃত্বে ৭৪টি নতুন OBC ক্যাটাগরির বৈধতা নিয়ে একটি পৃথক মামলা চলছে, যা এই বিষয়ে আরও স্পষ্টতা আনতে পারে।

ছাত্র-ছাত্রীদের উপর প্রভাব

এই আইনি জটিলতার কারণে WBJEE ২০২৫-এর ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে, যা প্রায় ১ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। অনেকে তাদের engineeringpharmacy কোর্সে ভর্তির স্বপ্ন নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ফলাফল ঘোষণার পর একটি বার্তায় বলেন, “যারা পাশ করেছেন তাদের অভিনন্দন, আর যারা ভালো ফল করতে পারেননি, তারা হতাশ না হয়ে ভবিষ্যতে আরও ভালো করার জন্য প্রস্তুতি নিন।” এই বার্তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে।

ভবিষ্যতের দিক

WBJEEB-এর Special Leave Petition (SLP) দায়েরের মাধ্যমে কী সমাধান চাওয়া হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই মামলা পশ্চিমবঙ্গের OBC সংরক্ষণ নীতি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় এই জটিলতার সমাধান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দৃষ্টি এখন শীর্ষ আদালতের দিকে।


WBJEEB এবং OBC সংরক্ষণ নিয়ে চলমান এই আইনি লড়াই শুধু একটি প্রশাসনিক বিষয় নয়, বরং এটি হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে জড়িত। সুপ্রিম কোর্টের রায় এই বিষয়ে স্পষ্টতা আনবে এবং পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে বলে আশা করা যায়।

আরও আপডেটের জন্য wbjeeb.nic.in ওয়েবসাইটটি দেখুন।

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Breaking

Know More